শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : কোন প্রেক্ষাপটে র্যাব এবং এর সাত সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করল, তার ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পাশাপাশি আইনগতভাবে মোকাবেলা করার চিন্তা-ভাবনার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এবার দেশের স্বার্থে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের কথাও ভাবা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহিরয়ার আলম গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য জানান।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যেভাবে সম্পৃক্ত আছে এবং যেভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকা আর বাড়বে না বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
র্যাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অন্য কোনো দেশ বা সংস্থা র্যাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমনকি শান্তিরক্ষী নিয়োগ নিয়ে জাতিসংঘ বলেছে, তারা দেখেশুনে শান্তিরক্ষী নিয়োগ করে থাকে। এসবের মধ্যেই জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি পদে বাংলাদেশ সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়েছে।
শাহিরয়ার আলম বলেন, ‘আমরা জানতে চাচ্ছি, কী কী কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ দপ্তর থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং এটির ব্যাপ্তি কতটুকু। এটি আমরা লিখিতভাবে জানতে চেয়েছি। আমাদের বলা হয়েছে, তারা উত্তর দেবে। তবে একটু সময় নেবে। ’
তিনি বলেন, ‘র্যাব ও এর সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার পর অন্য কারো সমর্থন না পাওয়াও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ। তারা যে কাজটি করেছে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরাও কূটনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জ করছি। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে চ্যালেঞ্জ করব। আমরা আমাদের বন্ধুদের অবশ্যই সম্পৃক্ত করব।’
এর জন্য সরকার যুক্তরাষ্ট্রে আইনি প্রতিষ্ঠান ভাড়া করছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। আমরা সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি। আমরা কথা বলছি। একাধিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা খুব শিগগির সিদ্ধান্তে যাব, এটিও বলতে পারি।’
গত ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর একে পুঁজি করে অনেকে সস্তা রাজনীতি করেছে বলে অভিযোগ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার দু-তিন দিনের মাথায়ই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। বিএনপির আরেক নেতা বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। একজন এমপিকে দিয়ে চিঠি লিখিয়ে আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে বিতরণ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘র্যাব আমাদের দেশের গর্বের একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের ভাগিদার র্যাব। তাদের ও তাদের কর্মকর্তাদের রক্ষা করা আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। সেই জায়গা থেকে আমরা আইনি বিষয়গুলো দেখছি।’
শাহিরয়ার আলম বলেন, ‘র্যাবের মতো কার্যকর বাহিনী যদি ব্যর্থ হয়, তবে তাতে একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ হবে। কারণ তাদের সফলতার পাল্লা এতটাই ভারী, তাদের ওপর এতটাই নির্ভরশীল বাংলাদেশের জনগণ, সে ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে আমরা তাদের সহযোগিতা করতে চাই। তাদের শক্তিশালী করতে চাই।’